পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেছেন,
إِنَّهُۥ لَيْسَ لَهُۥ سُلْطَـٰنٌ عَلَى ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের রবের উপর তাওয়াক্কুল করেছে, তাদের উপর শয়ত্বানের কোন ক্ষমতা নেই। (সূরা আন নাহল,আয়াতঃ৯৯)
কেউ জানা সত্ত্বেও যদি গুনাহ করে তবে সে তার গুনাহের জন্য সরাসরি শয়ত্বানকে দায়ী করতে পারবে না কারণ সে তার রবের করা সতর্ক বার্তা অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি,সুতরাং সে তার রবের উপর তাওয়াক্কুল করেনি। তাই শয়তান নিজ
থেকে তাকে গুনাহে লিপ্ত করেনি বরং সে নিজেই শয়ত্বানকে তার নিজের কাছে টেনে নিয়েছে এবং তার মাধ্যমে গুনাহে লিপ্ত হয়েছে।
সুতরাং যদি গুনাহ থেকে বাঁচতে চাই তবে আমাদের শুধু ঈমান আনলে হবে না বরং আল্লাহ'র উপর পরিপূর্ণ তাওয়াক্কুল (আস্থাস্থাপন) করতে হবে।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ আরো বলেছেন,
إِنَّمَا سُلْطَـٰنُهُۥ عَلَى ٱلَّذِينَ يَتَوَلَّوْنَهُۥ وَٱلَّذِينَ هُم بِهِۦ مُشْرِكُونَ
তার ক্ষমতা তো কেবল তাদের উপর, যারা তাকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ কর এবং যারা আল্লাহর সাথে শরীক করে। (সূরা আন নাহল,আয়াতঃ১০০)
যেহেতু শয়ত্বানের ক্ষমতা তাদের উপর নেই যারা আল্লাহকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করেছে,সেহেতু আমাদের উচিত আল্লাহকে পরিপূর্ণভাবে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করা এবং আমাদের প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় সকল কিছুর জন্য আল্লাহ'র উপর তাওয়াক্কুল করা।কারণ আল্লাহ যদি না চাই তবে তা যদি একটি জুতার ফিতাও হয় তাও আমাদের কপালে জুটবেনা।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ আরো বলেন,
وَٱتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ٱلَّذِىٓ ءَاتَيْنَـٰهُ ءَايَـٰتِنَا فَٱنسَلَخَ مِنْهَا فَأَتْبَعَهُ ٱلشَّيْطَـٰنُ فَكَانَ مِنَ ٱلْغَاوِينَ
তাদেরকে ঐ লোকের সংবাদ পড়ে শোনাও যাকে আমি আমার নিদর্শনসমূহ প্রদান করেছিলাম। কিন্তু সে সেগুলোকে এড়িয়ে যায়। অতঃপর শয়ত্বান তাকে অনুসরণ করে, ফলে সে পথভ্রষ্টদের দলে শামিল হয়ে যায়। (সূরা আল আ'রাফ,আয়াতঃ১৭৫)
এই আয়াত সম্পর্কে ব্যাখ্যাকারীগণ এটিকে এক নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য বলেছেন, যে আল্লাহর কিতাবের জ্ঞান রাখত; কিন্তু পরে পার্থিব ভোগ-বিলাস ও শয়ত্বানের পিছনে পড়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যায়। তবে নির্দিষ্ট ব্যক্তি কে ছিল? তা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। অতএব এ ব্যাপারে কষ্ট করার প্রয়োজন নেই।
তবে এই আয়াত পড়ে বুঝা যায় যে,যদি আল্লাহ'র নিদর্শনসমূহ বা আদেশ-নিষেধ,বিধি-বিধান পৌছানোর পরও এড়িয়ে যায় বা অমান্য করি তবেই শয়ত্বান আমাদের বিভিন্নভাবে পথভ্রষ্ট করার সুযোগ পাবে আন্যথায় তার কোনো ক্ষমতা নেই যে আমাদের গুনাহে লিপ্ত করবে বা অনুসরণ করবে।
সুতরাং এইসব আয়াতের পরিপেক্ষিতে বুঝা যায় যে আমাদের কোনো অবকাশ নেই যে আমরা গুনাহ করবো এরপর তা শয়ত্বানের উপর চাপিয়ে দিয়ে নিজেরা বেঁচে যাবো,কারণ আল্লাহ আগেই আমাদের সতর্ক করে দিয়েছেন শয়ত্বানের ব্যাপারে।এবং শয়ত্বানের হাত থেকে বাঁচার উপায় ও বলে দিয়েছেন।
Comments